সত্য ও সুন্দরের প্রতি আহ্বান

কুরবানী ও কুরবানীর পশু সংক্রান্ত মাসআলা

আল্লাহর সন্তুষ্টি ও কৃপা লাভের জন্য মুসলিম উম্মাহ প্রতিবছর ঈদুল আযহায় পশু কুরবানীর বিধান পালন করে থাকে। ইসলামী শরীয়া নির্দেশিত পথে কুরবানী করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় মাসআলা মাসায়েল পয়গাম পাঠকদের উদ্দেশে তুলে ধরা হলো।

যেসব পশু দিয়ে কুরবানী দেয়া যাবে

গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, দুম্বা, উট ইত্যাদি পশু কুরবানী দেয়া যাবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে এই যে, গরু, মহিষ কমপক্ষে দুই বছরের হতে হবে। ছাগল, ভেড়া, দুম্বা কমপক্ষে এক বছরের হতে হবে। উট কমপক্ষে পাঁচ বছরের হতে হবে। অবশ্য ছয় মাসের ভেড়া যদি দেখতে মোটাতাজা হয় এবং এক বছর বয়সের মনে হয় তাহলে তা দিয়ে কুরবানী বৈধ। [হেদায়া, শামী, আলমগীরী]

যে পশুই কুরবানী দেয়া হোক না কেন তা হতে হবে সুস্থ ও সবল। কুরবানীর পশু চয়নের ক্ষেত্রে মনে রাখবে, এই পশুটি আল্লাহর দরবারে উপহার দেয়া হচ্ছে। তাই উৎকৃষ্ট পশু উপহার দেয়া উচিত। দুনিয়াতে আমরা কোনো উচ্চ পদাধিকারী ব্যক্তির নিকট যদি কোন উপহার পাঠাই, তাহলে সবচে’ ভাল এবং উৎকৃষ্ট জিনিসটি পাঠাই। তাহলে মহান আল্লাহর নিকট পাঠানো জিনিস কেন উৎকৃষ্ট হবে না?

পশুর মধ্যে যেসব ত্রুটি থাকলে কুরবানী দেয়া যাবে না

(১) যে পশুর দৃষ্টিশক্তি নেই। (২) যে পশুর শ্রবণশক্তি নেই। (৩) এই পরিমাণ লেংড়া যে, জবাই করার স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না। (৪) লেজের অধিকাংশ কাটা। (৫) কানের অধিকাংশ কাটা। (৬) অত্যন্ত দুর্বল, জীর্ণ-শীর্ণ প্রাণী। (৭) গোড়াসহ শিং উপড়ে গেছে। (৮) পশু এমন পাগল যে, ঘাস পানি ঠিকমত খায় না। মাঠেও ঠিকমত চরানো যায় না। (৯) জন্মগতভাবে কান নেই। (১০) দাঁত মোটেই নেই বা অধিকাংশ নেই। (১১) স্তনের প্রথমাংশ কাটা। (১২) রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে গেছে। (১৩) ছাগলের দুটি দুধের যে কোন একটি কাটা। (১৪) গরু বা মহিষের চারটি দুধের যে কোনো দুটি কাটা। (১৫) জন্মগতভাবে একটি কান নেই।

ত্রুটি সত্ত্বেও যে পশু কুরবানী দেয়া যাবে

উত্তম হচ্ছে কুরবানীর পশু পরিপূর্ণ সুস্থ হওয়া। তবে কিছু ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও যেসব পশু কুরবানী করা যায় সেগুলো হচ্ছে—

(১) পশু পাগল, তবে ঘাস-পানি ঠিকমত খায়। (২) লেজ বা কানের কিছু অংশ কাটা, তবে অধিকাংশ আছে। (৩) জন্মগতভাবে শিং নেই। (৪) শিং আছে, তবে ভাঙ্গা। (৫) কান আছে, তবে ছোট। (৬) পশুর একটি পা ভাঙ্গা, তবে তিন পা দিয়ে সে চলতে পারে। (৭) পশুর গায়ে চর্মরোগ। (৮) কিছু দাঁত নেই, তবে অধিকাংশ আছে। স্বভাবগত এক অণ্ডকোষ বিশিষ্ট পশু। (১০) পশু বয়োবৃদ্ধ হওয়ার কারণে বাচ্চা জন্মদানে অক্ষম। (১১) পুরুষাঙ্গ কেটে যাওয়ার কারণে সঙ্গমে অক্ষম।

কতজন মিলে একটি পশু কুরবানী দিতে পারবে

ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি পশু শুধু এক ব্যক্তি কুরবানী দিতে পারবে। গরু, মহিষ, উট সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি মিলে কুরবানী দিতে পারবে। অনেকে মনে করে থাকে, কুরবানীর পশুতে একাধিক শরীক থাকলে অংশ নির্ধারণ করতে হবে বেজোড় সংখ্যা হিসেবে।

শরীক হতে হবে তিনজন, পাঁচজন বা সাতজন— এই ধারণা ঠিক নয়। সঠিক বিষয় হচ্ছে এই যে, এক থেকে সাত পর্যন্ত যে কোন অংশে পশুটিকে ভাগ করা যাবে। তাই দু’জন, তিনজন, চারজন, পাঁচজন, ছয়জন ও সাত ব্যক্তি মিলে একটি পশু কুরবানী দিতে পারবে।

একাধিক শরীক থাকলে করণীয়: একাধিক শরীক থাকলে লক্ষণীয় বিষয় এই যে, অংশ হিসেবে ভাগ যেন যথার্থ হয়। প্রাপ্য অংশের চেয়ে কেউ যেন কম বা বেশি না পায়। আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, কারো যেন নিয়তে গড়মিল না থাকে। কোন অংশীদারের যদি শুধু মাংস খাওয়া উদ্দেশ্য হয় তাহলে কারো কুরবানী হবে না। এজন্য কুরবানী শুদ্ধ হওয়ার জন্য সবার নিয়ত শুদ্ধ হওয়া জরুরি।

ভাল পশু ক্রয়ের পর ত্রুটিযুক্ত হয়ে গেলে: কুরবানীর উদ্দেশ্যে ভাল পশু ক্রয়ের পর যদি তা এই পরিমাণ ত্রুটিযুক্ত হয়ে যায়, যা দ্বারা কুরবানী জায়েজ হবে না তাহলে দেখতে হবে ক্রেতা ধনী না দরিদ্র? ক্রেতা যদি দরিদ্র হয় তাহলে সেই ত্রুটিযুক্ত পশু দিয়েই সে কুরবানী দিবে। আর যদি ক্রেতা ধনী হয়, তাহলে দ্বিতীয় আরেকটি পশু কিনে কুরবানী দিতে হবে। প্রথমটি দিয়ে কুরবানী শুদ্ধ হবে না। (ফতোয়ায়ে শামী, ৫ম খন্ড, ২৮৪ পৃষ্ঠা)

পশু জবাই করার জন্য যেসব শর্ত

ইসলামী শরীয়তে পশু জবাই করার জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। (১) জবাইকারী ব্যক্তি মুসলমান হতে হবে। (২) জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে হবে।  (৩) পশুর খাদ্যনালী, শ্বাসনালী ও গলায় অবস্থিত অন্যান্য রগ ভালভাবে কাটতে হবে। (জাওয়াহিরুল ফিকহ, ২য় খন্ড, ৩৭৫ পৃষ্ঠা।)

জবাই সংক্রান্ত হাদীস : (১) হযরত শাদ্দাদ ইবনে আউস (রা.) বলেন, প্রিয় নবী  (সা.) এরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা সব কাজের মধ্যে উত্তম পদ্ধতি অবলম্বন করাকে অবধারিত করে দিয়েছেন। তাই বিচার বিভাগ কোন অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড দিলে তা কার্যকর করবে। আর যখন কোন পশু জবাই করবে তখন উত্তম পদ্ধতিতে জবাই করবে। (উত্তম পদ্ধতি হলো) ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে দ্রুত জবাইয়ের কাজ সম্পন্ন করবে, যাতে মৃত্যুযন্ত্রণা থেকে সে রক্ষা পায়। (সহীহুল বুখারী)। (২) এক সাহাবী পশু শোয়ানোর পর ছুরি ধার দিচ্ছেলেন। রাসূল (সা.) দেখলেন এবং বললেন, তুমি প্রাণীটিকে একাধিকবার মৃত্যু দিতে চাচ্ছো।

জবাই করার নিয়মাবলী

(১) জবাই করার পূর্বে পশুকে ঘাস, পানি ইত্যাদি ভালভাবে খাওয়াতে হবে। কুরবানীর প্রাণীকে ক্ষুধার্ত বা পিপাসার্ত রাখা অন্যায়।

(২) পশুকে কুরবানী করার স্থানে টেনে হিঁচেড়ে নেয়া অন্যায়।

(৩) জবাই করার জন্য পশুকে শোয়াতে হবে সহজ সুন্দরভাবে। কঠোরভাবে নয়।

(৪) কেবলার দিকে ফিরিয়ে শোয়াতে হবে, বাম পার্শ্বের উপর।

(৫) পশুর চার পায়ের মধ্যে তিনটি বাঁধবেন।

(৬) আগে থেকেই ছুরি ধারা দিয়ে রাখতে হবে। ভোঁতা ছুরি দিয়ে জবাই করা যাবে না।

(৭) ছুরি যদি ধার দিতে হয় তাহলে পশুর সামনে ধার দেওয়া যাবে না। আড়ালে করতে হবে।

(৮) কুরবানীর পশু শোয়ানোর পর ছুরি ধারানো অন্যায়। বরং আগে থেকেই ধার দিয়ে নিতে হবে। (ফতোয়ায়ে রহীমিয়া, ১ম খণ্ড, ৯৮ পৃষ্ঠা)
Cow_korbani(৯) গলায় জবাই করতে হবে।

(১০) এমনভাবে জবাই করা যাবে না যাতে গলা পুরাপুরি  আলাদা হয়ে যায়।

(১১) জবাই করার সময় ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলতে হবে।

(১২) যাতে দ্রুত জবাই হয়ে যায় এবং পশুর কষ্ট কম হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে।

(১৩) একটি পশুকে আরেকটি পশুর সামনে জবাই না করা ভাল।

(১৪) পশুর প্রাণ বের হওয়ার পূর্বে চামড়া খসানোর কাজ শুরু না করা।

(১৬) ঘাড়ের দিক থেকে জবাই করা যাবে না।

(১৭) বিখ্যাত সাহাবী হযরত ইবনে আববাস (রা.) এর মত অনুযায়ী ঘাড়ের দিক থেকে জবাইকৃত পশুর গোশত খাওয়া বৈধ নয়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ, ২য় খণ্ড, ২৭৩ পৃষ্ঠা)

জবাইয়ের সময় বিভিন্ন দু‘আ

(১) কুরবানীর পশু কেবলার দিকে ফিরিয়ে শোয়ানোর পর এই আয়াত পড়বে: ‘ইন্নি ওয়াজ জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাযি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতী লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারীকা লাহু ওয়া বিজালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন।’

অর্থ: নিশ্চয় আমি দৃঢ়ভাবে সেই মহান সত্তার অভিমুখী হলাম, যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। আমি মুশরিকদের অন্তর্গত নই। নিশ্চয় আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ সবই সারা জাহানের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্যে নিবেদিত। তার কোন শরীক নেই। আমি এ কাজের জন্য আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি (আল্লাহর কাছে) আত্মসমর্পণকারীদের একজন।

(২) জবাই করার সময় এই দু‘আ পড়বেন: ‘আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাকা।’ অর্থ—  হে আল্লাহ! (এই কুরবানীর পশু) তোমার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত এবং তোমারই জন্য উৎসর্গকৃত।

এরপর ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ পড়বেন। অর্থ— মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি। আল্লাহ সবচেয়ে বড়।

(৩) জবাই করার পর এই দু‘আ পড়বেন: ‘আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিন ওয়া খলিলিকা ইব্রাহিমা আলাইহিমাস সালাম।’

অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! এই কুরবানীটি আমার পক্ষ থেকে কবুল করুন, আপনি যেরূপভাবে তা কবুল করেছিলেন আপনার প্রিয় বন্ধুদ্বয় মুহাম্মাদ (সা.) ও ইবরাহীম (আ.)-এর পক্ষ থেকে’ (মেশকাত শরীফ, ১ম খন্ড, ১২৮ পৃষ্ঠা)।

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে এর ওপর আমল করার তৌফিক দান করেন।

কুরবানীর পশুর গোশত বন্টন ও চামড়া সম্পর্কিত মাসায়েল

প্রতি বছর আমরা পশু কুরবানী করে থাকি। গোশত নিজেরা খাই এবং অন্যকে দেই। চামড়া বিক্রি করে গরীবদের মাঝে সে অর্থ বিলিয়ে দেই। এ বিষয়ে ইসলামের দিকনির্দেশনা পুরাপুরিভাবে আমরা অনেকেই জানি না। তাই প্রথমেই গোশত বণ্টন সম্পর্কে শরীয়াতের বিধান জেনে নিই। এরপর চামড়া সংক্রান্ত বিষয়ে ইসলামের বিধান জেনে নেব।

(১) কুরবানীর পশুর গোশত তিন ভাগ করে এক ভাগ গরীব মানুষকে, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীকে দেওয়া যায়। বাকি এক ভাগ নিজে খাবেন। (২) আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী গোশত নিতে আসবে এই অপেক্ষা না করে নিজ দায়িত্বে তাদের ঘরে গোশত পৌঁছে দেয়া উচিত। (৩) যদি একাধিক শরিক থাকে তাহলে গোশত ভাগ করবে ওজন করে। অনুমান বা আন্দাজ করে নয়। কারণ অনুমান করে ভাগ করলে কম-বেশি হতে পারে, যা গুনাহর কারণ। (৪) যে কসাই গোশত তৈরি করে দিবে তাকে আলাদাভাবে কাজের জন্য মজুরি দিতে হবে। মজুরি হিসেবে কুরবানীর গোশত দেয়া জায়েয নেই। তার প্রাপ্য মজুরি দেয়ার পর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের গোশত আলাদা দেওয়া যাবে। (৫) কারো ভাগে যদি পায়া, ক্ষুর, মাথা বা কোন হাড্ডি বেশি যায় তাহলে তার অংশ থেকে গোশত একটু কমিয়ে দিতে হবে। যেন গড়ে সমান হয়। (৬) কুরবানী যেহেতু আল্লাহর জন্য করা হয়, তাই এতে নিজে ভোগ করার চেয়ে গরীব মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা বেশি করা উচিত। (৭) কুরবানীর গোশত নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে, যতদিন ইচ্ছা রেখে খাওয়া যায়, এতে কোন বাধা নেই। (৮) পশুর রশি ও গলার মালা ইত্যাদি দান করে দিতে হবে।

 চামড়া সংক্রান্ত আলোচনা

(১) কুরবানীর পশুর চামড়া নিজে ব্যবহার করতে পারবে। (২) গোশতের মতো অন্যকে উপহারও দিতে পারবে। (৩) উত্তম হচ্ছে— পশুর চামড়া কোন মাদরাসার পরিচালককে উপহার দিয়ে দেয়া। তাহলে তিনি এটা বিক্রি করে মাদরাসার যে কোন কাজে লাগাতে পারবেন। (৪) চামড়া যদি বিক্রি করা হয় তাহলে তার মূল্য অবশ্যই গরীব মানুষের মধ্যে দান করে দিতে হবে। নিজে ব্যবহার করা যাবে না। (৫) চেষ্টা করা উচিত চামড়ার টাকা পরিবর্তন না করে হুবহু দান করে দিতে। (৬) চামড়া সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রির চেয়ে কোনো মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কাছে বিক্রি করা উত্তম। তাহলে তারা এ থেকে উপার্জিত অর্থ ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যয় করতে পারবেন।

বনের পশুকে নয় কুরবানী করতে হবে মনের পশুকে

আমরা মানুষ। আমাদের মধ্যে যেমন ফেরেশতার স্বভাব আছে তেমনি পশুর স্বভাবও আছে। মানুষের মধ্যে যত ভালো গুণ রয়েছে, সেগুলো হলো— ফেরেশতার স্বভাব। আর হিংসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা, অন্যায়ভাবে কারো উপর আক্রমণ করা, মানুষের ধন-সম্পদ অবৈধভাবে দখল করা, কারো অধিকার কেড়ে নেয়া ইত্যাদি হলো পশুর স্বভাব।

পবিত্র কুরবানীর ঈদে আমরা পশু কুরবানী করে থাকি। কুরবানীর মূল ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে এই উপলক্ষে অর্জিত তাকওয়া বা আল্লাহভীতি দ্বারা নিজের পশু স্বভাবকে কুরবানী করি না। তাই আমাদের সমাজ থেকে অন্যায় অবিচার দূর হয় না। যদি পশু কুরবানীর সাথে সাথে আমরা নিজেদের পশু স্বভাবটিকেও কুরবানী করতে পারি, তবেই আমাদের সমাজ হবে সুখময়, শান্তিময় ও আনন্দময়।

আল্লাহর রাসূল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের সময়ে মানুষ যেরূপ শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে জীবন যাপন করেছে, অনুরূপ পবিত্র স্বভাবের অধিকারী হয়ে আজও সেরূপ শান্তি ও নিরাপত্তা আমরা লাভ করতে পারি। এ জন্যে আমাদেরকে সাহাবায়ে কেরামের গুণাবলী অর্জন করতে হবে। মহানবী (সা.)-এর পরশে এসে তাদের জীবন হয়েছিল অতি উঁচু মানের নৈতিক গুণাবলীর ধারক। তাদের মাঝে ছিল সব উত্তম গুণাবলী।

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর মহা ত্যাগের মহাস্মৃতি পবিত্র কুরবানী অনুষ্ঠান থেকে লব্ধ শিক্ষা দ্বারা আমরা যাতে নিজেদের চরিত্র গঠন করতে পারি, আল্লাহ আমাদের সেই তওফিক দিন। এটাই একমাত্র কামনা।

[কৃতজ্ঞতা: মুফতি মুহাম্মদ আল আমীন]

তথ্য সূত্র: POYGAM.COM

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.